ফেনীর টুটুল ভূইয়ার ঘটনাটা যৌতুকের কারণে নাকি স্ত্রীর পরকীয়ার কারণে সেটা এখনো ক্লিয়ার নয়।



ফেনীর টুটুল ভূইয়ার ঘটনাটা যৌতুকের কারণে নাকি স্ত্রীর পরকীয়ার কারণে সেটা এখনো ক্লিয়ার নয়।
এলাকাবাসীর কেউ কেউ বলছে যৌতুকের কারণে আবার কেউ কেউ বলছে পরকীয়ার কারণে।

এটা যদি যৌতুকের ঘটনা হয়ে থাকে তাহলে আমি আপাতত কিছু বলব না, কারণ এটা নিয়ে বলার জন্য অসংখ্য নারীবাদীরা বসে আছে।
যদি এটা পরকীয়ার জন্য হয়ে থাকে তাহলে আমি কিছু কথা বলতে চাই।

ফেনীর টুটুল ভূইয়ার ঘটনার নিউজটা হচ্ছে এমন "স্ত্রীর পরকীয়ার পারিবারিক কলহের জেরে স্ত্রী কুপিয়ে হত্যা করল স্বামী"
আচ্ছা নিউজটা এমন নাহয়ে, ঠিক যদি এরকম নিউজ হতো - "পরকীয়ার দায়ে স্বামীর লিংগ কেটে ফেললো স্ত্রী" , তাহলে নারীবাদীরা হাসাহাসি করতো ,শেয়ার করতো , মিম বানাইত, ট্রল করত।

অথবা নিউজটা যদি এমন হইত- "পরকীয়ার জন্য স্বামীকে কুপিয়ে যখম করলো স্ত্রী"
তাহলে হাফ লেডিস আর নারীবাদীরা বলতো জাস্টিফাইড!! সুশীল সমাজের ব্যক্তিরা স্যাটিসফাইড।
আর আমরা হাততালি দিতাম, বাহবাহ করতাম।

কিন্তু এখন, খুন হওয়া ব্যক্তি একজন মহিলা আর খুনী  একজন পুরুষ হওয়ার কারণে কারো মুখে কোনো কথা নেই।
উল্টো বলছি, তার সর্বোচ্চ শাস্তি চাই, ফাঁসি চাই, ইত্যাদি ইত্যাদি.....

যদি এই ঘটনা যৌতুকের জন্য হয়ে থাকে তাহলে আমি খুনি টুটুল ভূইয়ার সর্বোচ্চ শাস্তি দাবী করছি।
আর যদি পরকীয়ার জন্য খুন করে থাকে তাহলে আমি এই খুনকে ১০০% সমর্থন করি, এবং তাকে স্যালুট জানাই।
বিচার যখন কোথাও পাওয়া যায়না তখন নিজের হাতে বিচার করাটা শ্রেয় মনে করি।

এই হত্যা যে যৌতুকের কারণে নয় সেটা আমি পুরোপুরিভাবে নিশ্চিত। কারণ যৌতুকের কারণে হত্যা করার ইচ্ছা থাকলে কখনো ফেইসবুকে লাইভে এসে হত্যা করে প্রমাণ রাখতোনা।
গোপনে হত্যা করে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেয়ার চেষ্টা করতো।

পারিবারিক সুত্রেও জানা গেছে এটা পরকীয়ার কারণে।
মেয়েটি নাকি বাড়ি থেকে একবার চলেও গিয়েছিল।

এখন কেউ আমাকে প্রশ্ন করতে পারেন, ভাই আপনি কি পাগল হয়ে গেছেন নাকি? পরকীয়া হোক কিংবা যেকারণে হোক আপনি কিভাবে একটা হত্যাকে সমর্থন করতে পারেন?

আমি বলব, উপায় নেই রে ভাই।
যারা পরকীয়ায় জর্জরিত স্ত্রীর সাথে সংসার করে একমাত্র তারাই জানে জীবনটা কিরকম জাহান্নাম।
এই জীবন নামের জাহান্নাম থেকে মুক্তি পেতে ৫টি উপায় আছে।
১)চোখমুখ বুজে সবকিছু সহ্য করা।
২)স্ত্রীকে তালাক দেয়া।
৩)স্ত্রীর নামে মামলা করা।
৪)নিজে আত্মহত্যা করা।
৫)স্ত্রীকে হত্যা করা।

আসুন একটা একটা নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করি।

১)চোখমুখ বুজে সবকিছু সহ্য করাঃ-
স্ত্রী চোখের সামনে অন্য পুরুষের সাথে ফষ্টিনষ্টি করছে?
আপনি চাইলে সবকিছু চোখমুখ বুজে সহ্য করতে পারেন। যেটা বাংলাদেশের ৮০% বিবাহিত পুরুষরাই করে থাকে। সেটা করতে পারলে ভালো, তবে সমস্যা একটাই। ঐযে বললাম, আপনার জীবনটা আর জীবন থাকবেনা, জাহান্নাম হয়ে যাবে।

২)স্ত্রীকে তালাক দেয়াঃ-
এটা করার জন্য আপনাকে অবশ্যই কোটিপতি হতে হবে, অথবা অনেক টাকার মালিক হতে হবে।
আর যদি কিছুই না থাকে তাহলে বাড়িভিটা বিক্রি করে স্ত্রীর দেনমোহরের টাকা শোধ করতে হবে।
কারণ বর্তমানে বেশীরভাগ মেয়েরাই বিয়ের নামে এই দেনমোহরের ব্যবসায় নেমে পরেছে।
মোটা অংকের দেনমোহর দিয়ে বিয়ে করে কিছুদিন পর কোনো কারণ ছাড়াই তালাক চেয়ে দেনমোহরের টাকা হাতিয়ে নেয়া।
তাদের বিয়ে করার উদ্দেশ্য একটাই,  সংসার করা নয়, দেনমোহরের টাকা হাতিয়ে নেয়া।
২০লাখ, ৩০লাখ, ৪০লাখ কিংবা কোনো কোনো ক্ষেত্রে ৫০লাখ।
দেনমোহরের এই ব্যবসায় শুধু মেয়েরা নয়, বরং বেশীরভাগ ক্ষেত্রে মেয়ের পরিবারও জড়িত থাকে।
(বলে রাখা ভালো, ডাঃ আকাশ স্ত্রীকে তালাক দিতে চেয়েছিলেন,  কিন্তু দেনমোহরের ৩০লাখ টাকার চাপে পড়ে আত্মহত্যা করেছিলেন।)

৩)স্ত্রীর নামে মামলা করাঃ-
কি মামলা করবেন???
আপনার স্ত্রী পরকীয়া করে??
তাহলে স্ত্রী আপনার নামে পাল্টা মামলা করবে, আপনি তাকে যৌতুকের জন্য শারীরিক নির্যাতন করেন😁😁
কারণ এটা মেয়েদের অনেক বড় একটা হাতিয়ার, হাতিয়ার যেহেতু আছে, ব্যবহার তো করবেই।
আপনার স্ত্রীর মামলার কাছে আপনার মামলা অসহায়।
আপনার মামলাকে কেউ গুনবেও না।
তখন আপনার মামলার ফাইলটা আদালতের কোনো একটি কোণায় অন্য ফাইলের নিচে চাপা পড়ে থাকবে।

৪)নিজে আত্মহত্যা করাঃ-
আত্মহত্যা করবেন???
তাহলে মৃত্যুর পর এই সমাজ আপনাকে কাপুরষ বানিয়ে দিবে। বলবে স্ত্রীর পরকীয়ার জন্য আত্মহত্যা করে সে কেমন পুরুষ!!!
আপনাকে গালাগাল করবে, থুথু দিবে।
মৃত্যুর পরও আপনি শান্তি পাবেন না।
আর যদি ভেবে থাকেন আপনি আত্মহত্যা করলে আপনার স্ত্রী শাস্তি পাবে, সেটাও ভুল।
ডাঃ আকাশের আত্মহত্যার পর তার স্ত্রী মিতু কয়েকদিন জেল কেটে জামিন নিয়ে এখন কত সুন্দর ঘুরে বেড়াচ্ছে।
মিন্নীর জন্য চলে গেল নয়ন বন্ড আর রিফাতে দুই দুইটা তরতাজা প্রাণ, অথচ সেই মিন্নী জামিন নিয়ে মুক্ত হাওয়া খেয়ে বেড়াচ্ছে।

স্ত্রীর পরকীয়ার জন্য এক পুলিশ ভাই কিছুদিন আগে ফেইসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে খুব বেশী দিনের কথা নয়।
চিটাগংএ গত বছর হাসনা বেগম আর তার প্রেমিক মিলে হত্যা করেছিল স্বামী, সন্তানকে।
.
এভাবে স্ত্রীর পরকীয়ায় খুন হয়েছে খুলনার জামাল শেখ, রংপুরের রথীশ চন্দ্র, মহেশখালীর আব্দুল মান্নান, টাঙ্গাইলের নাসির মোল্লা, কিশোরগঞ্জের মাহবুবুর রহমান, কয়েকদিন আগে ফ্রিল্যান্সার শামীম ভাই সহ নাম না জানা হাজারও মানুষ......

আসলে কি জানেন, এদেশে নারী নির্যাতনের আইন আছে, কিন্তু পুরুষ নির্যাতনের কোনো আইন নেই।
অথচ গবেষণায় দেখা গেছে, পুরুষরাই প্রতিনিয়ত সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত হচ্ছে মানসিকভাবে।

ডাঃ আকাশ, ফ্রিল্যান্সার শামীম, আত্মহত্যা করেছে বলেই তাদেরর ঘটনাটা আমাদের চোখের সামনে এসেছে, অথচ বাংলাদেশের ৮০% পরিবারে প্রতিনিয়ত  এরকম ঘটনা ঘটছে।
সবাই হয়তো ডাঃ আকাশ কিংবা ফ্রিল্যান্সার শামীম ভাইয়ের মত আত্মহত্যা করতে পারেনা। নিজের পরিবার, মা-বাবা, ভাইবোন, সন্তানদের কথা চিন্তা করেই জীবনের সাথে যুদ্ধ করে বেঁচে থাকতে হয় তাদের।

বাংলাদেশের হাজার হাজার লক্ষ লক্ষ পরিবারে স্বামীর চোখের সামনেই স্ত্রী পরপুরুষের সাথে অবৈধ মেলামেশা করছে অথচ নিরীহ স্বামী কিছুই করতে পারছেনা। কারণ পুরো দেশটাই তো এখন নারীবাদীদের দখলে। নারী স্বাধীনতার নামে চলছে নষ্টামি, নোংরামি, পরকীয়ার মত মারাত্মক অপরাধ।

কিছু বললেই তাদের কাছে রয়েছে এক বিরাট অস্ত্র, "নারী নির্যাতন মামলা"
কিছু বললেই নারী নির্যাতন মামলা ঠুকে দেয়, অথচ কিছুদিন আগে একটা প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে এই নারী নির্যাতন মামলার ৯০% মামলাই মিথ্যা এবং ভূয়া।
এগুলো করা হয় মূলত পুরুষকে হয়রানী করার উদ্দেশ্যে।

স্ত্রী যখন পরকীয়া করে তখন আমরা স্বামীর দোষ দিই।
স্বামী বোধহয় শারীরিক দুর্বল-ধ্বজভঙ্গ, স্ত্রীর যৌন চাহিদা মেটাতে পারছেনা বলেই স্ত্রী পরকীয়া করছে।

অথচ স্বামী যখন পরকীয়া করে তখন স্ত্রীর দোষ দিইনা, উল্টো তখনও স্বামীর দোষ দিই। স্বামী চরিত্রহীন, লম্পট, ঘরে স্ত্রী রেখে অন্য মহিলার সাথে সম্পর্ক ইত্যাদি ইত্যাদি....

মানে স্ত্রী পরকীয়া করলেও সেটা দোষের কিছুনা কিন্তু স্বামী পরকীয়া করলে সেটা মারাত্মক অপরাধ।

আচ্ছা একটা মেয়ের সাথে আপনার প্রেমের সম্পর্ক, কোনো কারণে সম্পর্ক ভেঙ্গে গেলে মেয়েটি চাইলে আপনার বিরুদ্ধে "বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ"এর মামলা দিয়ে দিতে পারবে। আপনাদের শারীরিক সম্পর্কটাকে ধর্ষণের রুপ দিতে পারবে।
অথচ একটা মেয়ের সাথে আপনার প্রেমের সম্পর্ক ভেঙ্গে গেলে আপনি মেয়েটির নামে কোনো মামলা দিতে পারবেন না।
কারণ প্রেমে প্রতারিত হলে আদালত এমন কোনো মামলা নেয়না। জ্বি হ্যা, এটাই আমাদের সমাজ।

এভাবেই আমরা মেয়েদের সব অপরাধকে বৈধতা দিয়ে আসছি প্রতিনিয়ত।

আমাদের সামাজ ব্যাবস্থার সবচেয়ে একচোখা নীতিটা হচ্ছে  একটা মেয়ে যখন নির্যাতিত হয়ে মারা যায় সেটা সবার বোন হয়ে যায় ,কিন্তু অভিচারে নির্যাতিত পুরুষটা কারো ভাই হয় না।

সর্বশেষ একটা কথা, আমি শুধুমাত্র ফেনীর টুটুল ভূইয়ার কথা বলিনি, আমি আমাদের পুরো সমাজব্যবস্থার কথা বলেছি।

আর হ্যা, আমি এটাও বলছি না..যে পুরুষ ভালো হয়ে গেছে, পুরুষরা কোনো অপরাধ করেনা তা নয়।
আমার বক্তব্য হল..পুরুষ অপরাধে লিপ্ত হলে তার জন্য আইন আছে আদালত আছে..থানা আছে, পুলিশ আছে..

আর নারী অপরাধ করলে..নারী সুরক্ষা কমিশন আছে..নারীবাদীরা আছে, নারীদের জন্য স্পেশাল আলাদা আইন আছে..সমাজও নারীর পাশে থাকে...কিন্তু পুরুষের প্রতি অন্যায় হলে..তার পক্ষে কেউ থাকেনা...এমনকি সমাজ ও পাশে থাকেনা...পুরুষকে কাঁদতে হয় একা একা....
তাই আমার কথা হল, মহিলা আইন..পুরুষ আইন না করে...এক দেশ এক আইন..চালু করা উচিত...
একই অপরাধে...নারী পুরুষের একই শাস্তি হওয়া উচিত..
এখন নারী পুরুষ সমান সমান...তাহলে..আইন আর সামাজিক সম্মান আলাদা কেন..??
সবার জন্য একই আইন চাই।

লেখাগুলো অনেকটা মনের ক্ষোভ নিয়ে বাস্তবতার আলোকে লিখেছি।
ভুলত্রুটি ক্ষমা করবে🙏🙏🙏

কপি : ফেসবুক

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ